জহিরুল ইসলাম লাল ::
তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে সুনামগঞ্জ স্টেডিয়ামে মাঠে খেলোয়াড় নামানোর অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া প্রথম বিভাগ ক্রিকেটলীগ স্থগিত করে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন আদালত।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারী) আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক প্রবাল চক্রবর্তী এই আদেশ দেন।
অভিযোগে জানা যায়, তিন বছর পর সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া দলের আয়োজনে জেলা স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ক্রিকেটলীগ গেল বছরের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়।
এতে ১১ টি দল অংশ গ্রহন করে।
খেলার প্রথম রাউন্ড শেষ হওয়ার পর কিছু খেলোয়াড় ও দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং সুপারলীগ স্থগিত করতে ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ৮ টি দল।
অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে খেলা চালানোর নির্দেশ দেন ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাকির হোসেন।
এদিকে অভিযোগকারীরা ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে মিলেনিয়াম টিমের ম্যানেজার লাভলু আহমেদ বাদী হয়ে অবশেষে আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
বাদীপক্ষের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট স্বপন কুমার দাস রায় বলেন, বিজ্ঞ আদালত জেলা ক্রীড়া দলের ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি জাকির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রেজুয়ানুল হক রাজাকে কারণ দর্শাণো সহ অনুষ্ঠিত চলমান ক্রিকেটলীগ বন্ধ রাখার মর্মে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি বরাবরে দায়ের করা ৮ টি অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, ক্রিকেট অনুবিধির ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ক্রিকেটার রাজীব ও মান্নার দাখিলকৃত কাগজপত্র আইন পরিপন্থী।
মেজবাহ, হিরা ও নাহিদের দাখিলী পাসপোর্ট কপি অস্পষ্ট ও সন্দেহজনক।
এছাড়াও রাজীব ও সনি দাশের পিতা সিলেট জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
এসব খেলোয়াড় ও প্যারামাউন্ট ক্লাবের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা ও নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সুপারলীগ স্থগিত রাখার জন্য এ আবেদন করা হয়।
অভিযোগে সাক্ষর করেন, নিউ মিলিনিয়াম ওয়েস্টার্ন, বাঁধন, নিউ ষ্টার, নতুন পাড়া, দিগন্ত, ফ্যান্টম, অগ্নিবীণা ক্রিকেট ক্লাবের কর্মকর্তারা।
ওয়েস্টার্ন ক্রিকেট ক্লাবের জুনেল আহমদ রাজরাম বলেন, প্যারামাউন্ট ক্লাবের কর্মকর্তারা বেআইনি ভাবে সুনামগঞ্জের বাহির থেকে খেলোয়াড় এনেছেন।
আমরা প্রমানাদিসহ অভিযোগ জানানোর পরও সংশ্লিষ্টরা কোন উত্তর দেননি।
এর আগে একই অভিযোগের দায়ে একটি দল ও খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা ক্রিড়া সংস্থা।
কিন্তু প্যারামাউন্ট ক্লাবের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
মামলার বাদী নিউ মিলিনিয়াম ক্রিকেট ক্লাবের ম্যানেজার লাভলু আহমেদ জানান, প্রথম বিভাগ ক্রিকেটলীগে একটি ক্লাবের ৬ জন খেলোয়াড় অবৈধভাবে খেলেছেন।
প্রথমে আমরা ক্রিকেট বিভাগের সভাপতি বরাবরে অভিযোগ করি।
পরে আমরা নিজেরাই প্রমানপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছি।
তার পরও তিনি কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালতে যেতে হয়েছে।
প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এনাম আহমদ বলেন, যে খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের কেউ কেউ দীর্ঘ দিন এই মাঠে জেলা ক্রিকেট দলে খেলেছেন।
জেলা ক্রিকেট দলেও ছিল তারা।
এছাড়া এই খেলোয়াড়রা কয়েক বছর হয় সুনামগঞ্জ ক্রিকেট বিভাগের অন্যান্য দলে খেলে, দল বদল করে প্যারামাউন্ট ক্রিকেট দলে এসেছে বেশ কয়েক বছর আগে। এ অভিযোগের বিষয়টি হাস্যকর।
জেলা ক্রিড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক রেজুয়ানুল হক রাজা জানান, তিন বছর পর ক্রিকেট লীগ চলছে। অনেকদিন পর মাঠে এসেছে খেলোয়াড়রা।জমজমাট আয়োজনে ক্রিকেটলীগ শুরু হয়েছে। কিছু দল ৬ জন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগের তদন্ত করা হলে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে আরও ১ দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারও সত্যতা মেলেনি। আদালতে মামলা হয়েছে শুনেছি, তবে আদেশ এখনো দেখিনি বলেও তিনি জানান।
Leave a Reply