স্টাফ রির্পোটার ::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার পশ্চিম ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি সহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবকসহ এলাকাবাসী সাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে দাখিল করা হয়।
এ ছাড়াও অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনী জগন্নাথপুর ক্যাম্প বরাবরে প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) এলাকাবাসীর পক্ষে স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ছমির উদ্দিন সহ ১৬৬ জন স্বাক্ষরিত দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুল ইসলাম বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার কারণে ইতিমধ্যে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য ও অভিভাবকবৃন্দ দুর্নীতিবাজ ও অনিয়মের সাথে জড়িত প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবী করছেন।
অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক তাহার নিজের খেয়াল খুশিমত বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন।
বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও শিক্ষক হাজিরা খাতায় তিনি স্বাক্ষর করেন। কমিটির সদস্যদের অবগত না করে স্কুলের স্লীপ ফান্ডের টাকা, ক্ষুদ্র মেরামতের টাকা উত্তোলন করে নামে বেনামে ভাউচার তৈরী করে করে তিনি টাকা খরচ করেছেন।
বিদ্যালয়ের ছাদে, ছাদ বাগান করে বিভিন্ন ধরনের কৃষিপন্য ও সবজি উৎপাদন করে নিজের প্রয়োজন মেটানোসহ তিনি বাজারে বিক্রয় করেন।
তাছাড়া বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে স্কুল ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন ঠিকাদারী ব্যবসা, যেমন ইট, বালু ও পাথরের ব্যবসা ও পুরাতন স্কুল নিলামে ক্রয় করে বিক্রয় করার ব্যবসার সাথে তিনি জড়িত।
বিশেষকরে তিনি এলাকার সহজ সরল লোকজনকে শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধন করে দেয়ার কথা বলে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। অনেকের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত দেননি এমনকি নিবন্ধনও কেউ ফেরত পাননি।
অভিযোগে আরো বলা হয়, এলাকার লোকজনের কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ও ভোট তুলে দিবেন বলে টাকা নিয়েছেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে একই বিদ্যালয়ে তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়ীত্বে রয়েছেন।আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে স্কুল ফাঁকি দিয়ে ঠিকাদারী ব্যবসা করে যাচ্ছেন তিনি।
ইট, বালু ও কংকিট বিক্রয়ের জন্য তার নাম্বার সহ সাঁটিয়ে দেয়া হয়েছে জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে।
এছাড়া স্কুল ফাঁকি দিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিসের নাকের ডগায় প্রতিনিয়ত ঘুরাঘুরি করে বেশ বিতর্কের জন্ম দেন শিক্ষক মনিরুল।
যার ফলে উক্ত স্কুলের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে অনেকটা ধস নামে বলে অনেকেই জানান।
তার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে অনেক অজানা তথ্য বেড়িয়ে আসবে এমনটাই মনে করছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এলাকাবাসী আমাকে না চাইলে এই স্কুল থেকে অন্যত্র চলে যাবো।
তিনি ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ছমির উদ্দিন বলেন, আমি কাউন্সিলর থাকার পরও বিদ্যালয়ের কোন বিষয় তিনিনআমাকে অবগত করেনি।
বরং ইচ্ছেমতো দুর্নীতি করেছেন প্রধান শিক্ষক মনিরুল।
আমি ওয়ার্ডবাসীর পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলামের বদলীসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে উপজেলা শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে তদন্তক্রমে উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
Leave a Reply