স্টাফ রির্পোটার ::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে কেয়ারটেকার শেফু মিয়ার কবল থেকে প্রবাসীর বাড়ী উদ্ধার করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন পর বসত ঘরের চাবি হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা প্রবাসী এই পরিবার।
অনুসন্ধান ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথপুর উপজেলার ৮ নং আশারকান্দি ইউনিয়নের আটঘর গ্রামের মৃত এবারত উল্লার ছেলে মোহাম্মদ কালাম উল্ল্যাহ স্ব-পরিবারে যুক্তরাজ্য থাকার সুবাদে একই গ্রামের মৃত আব্দুল আজিমের ছেলে এবং আপন মামাতো ভাই শেফু মিয়াকে বাড়ীঘর দেখাশোনা করার জন্য আশ্রয় দেন।
এরই সুবাদে মোহাম্মদ কালাম উল্লাহ
মামাতো ভাই শেফু মিয়ার কাছে প্রবাস থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা পয়সা পাঠান।
এক পর্যায়ে প্রেরিত টাকার হিসাব চাইলে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হইলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফুফাতো ভাই মোহাম্মদ কালাম উল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে তিনি খারাপ আচরণ করতে থাকেন।
এর পর কেয়ারটেকার শেফু মিয়া প্রবাসী কালাম উল্লাহকে না জানিয়ে হাওরের জমি বন্ধক দেয়া সহ বসত বাড়ীর বিভিন্ন জাতের গাছ জোড়পূর্বক কেটে বিক্রি করলে প্রবাসী কালাম উল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম নেয়।
তখন কালাম উল্লাহ তার মালিকানাধীন দুটি বাড়ীর চাবি ফেরত দিয়ে শেফু মিয়াকে বাড়ী ছাড়ার জন্য তাগিদ দিলে তিনি প্রবাসী কালাম উল্লাহ ও তার পরিবারকে দেশে না আসার জন্য হুমকি দেয়।
এর কিছুদিন পর কালাম উল্লাহ ও তার স্ত্রী সালমা বেগম সহ পরিবারের সদস্যরা দেশে আসেন।
তারা বাড়ীতে উঠার চেষ্টা করে ব্যার্থ হলে কালাম উল্লাহ পরিবারের লোকজনকে নিয়ে তার শশুরালয়ে উঠেন।
পরে কেয়ারটেকার শেফু মিয়ার কবল থেকে তার নিজ বাড়ী উদ্ধারের জন্য এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের কাছে সহযোগিতা চাইলে শেফু মিয়া এতে সারা না দেওয়ায় তারা আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিলে প্রবাসী মোহাম্মদ কালাম উল্লাহ ও তার স্ত্রী সালমা বেগম বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জগন্নাথপুর ক্যাম্প কমান্ডারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এরই প্রক্ষিতে সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন হুমায়ুন স্থানীয় আশারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব খানকে প্রবাসীর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য বললে এ নিয়ে ইউপি কার্যালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে কেয়ারটেকার শেফু মিয়া এর স্ব-পক্ষে কোন কাগজপত্র বা কোন যৌক্তিক দাবী উপস্থাপন করতে না পারায় তাকে ২ দিনের মধ্যে বসত ঘরের চাবি ফেরত দিয়ে বাড়ী ছাড়ার নির্দেশ দেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শেফু মিয়া চাবি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দিয়ে আসলে পরদিন বুধবার সকাল ১০ টায় চেয়ারম্যান আয়ূব খানের পক্ষে পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সাজন খান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শওকত আলী সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সহযোগিতায় প্রবাসী মোহাম্মদ কালাম উল্লাহর নিকট চাবি হস্তান্তর করে বাড়ী-ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় আপন ঠিকানায় উঠতে পেরে আনন্দে আত্মহারা প্রবাসী পরিবার।
প্রবাসী মোহাম্মদ কালাম উল্লাহ বলেন আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা খুবই আনন্দিত। আমার বাড়ী-ঘর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ফেরত পেয়েছি। অবশেষে হলেও আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।
আমার মামাতো ভাই দখলবাজ শেফু মিয়া এতোদিন আমার জায়গা-জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছিল।
এখন সে আমাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে যে, আমি লন্ডনে চলে গেলে সে আমার জায়গাজমি ও বাড়ীঘর পুনরায় দখল করে নিবে। আমার সম্পত্তি দেখাশুনা করার জন্য দেশে বিশ্বস্ত কোন লোক না থাকায় আমি তার হুমকি-জনিত কারণে চরমভাবে শংকিত।
এ ব্যাপারে ৮ নং আশারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব খান বলেন, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ও ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় প্রবাসী পরিবারের বাড়ী উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। প্রবাসী পরিবার তাদের বাড়ী তারা ফেরত পেয়েছেন।
প্যানেল চেয়ারম্যান সাজন খান বলেন প্রবাসী কালাম উল্লাহর আপন মামাতো ভাই শেফু মিয়া তাদের বাড়ীটি দখল করে রেখেছিল।
সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে আমরা বাড়ির মালিককে দখল বুঝিয়ে দিয়েছি।
তবে ঘরে কোন আসবাবপত্র ছিলনা। এসব মালামাল শেফু মিয়া নিয়ে গেছেন বলেও তিনি স্বীকার করেন।
Leave a Reply